বেনাপোল প্রতিনিধিঃ যশোরের বেনাপোল পৌরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ভোটাধিকার ও পৌরবাসীর উন্নয়নের সার্থে অনতিবিলম্বে নিবার্চনের দাবীতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বেনাপোল পৌরবাসীর আয়োজন এই মতবিনিময় সভা শনিবার ১০ অক্টোবর সকাল ১০টার সময় বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন ভবনে অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় মোস্তাক আহমেদ স্বপনকে আহবায়ক, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহ আলম ও সাংবাদিক আলহাজ্ব মহাসিন মিলননের নাম যুগ্ন আহবায়ক প্রস্তাব করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর মামলার জটিলতা উপেক্ষা করে যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখে ৮ বছর পর বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে নির্বাচনি আমেজ দেখা দিয়েছে। ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারী বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমান মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়। তারপর থেকে আজ অবধি আর কোন নির্বাচন হয়নি। কৌশলগত কারনে নির্বাচণ না হওয়ার জন্য এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে বেনাপোল পৌরসভার মেয়র তার কাছের একজনকে দিয়ে নাম মাত্র মামলা দিয়ে ভোট বন্ধ করে রেখেছে। তিনি বলেন বেনাপোল সকল শ্রেনীর নাগরিকরা চায় নতুন করে বেনাপোল পৌরসভায় নির্বাচন হোক। জনগনের চাহিদা নতুন নেতৃত্ব আসুক। জনগন ভালো ভালো নাগরিক সুবিধা পাক। এ জন্য দ্রুত ভোট হওয়া উচিৎ। অনতিবিলম্বে পৌরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী নির্বাচন না হলে বেনাপোল বন্দরকে অচল করে দেয়ার হুমকি প্রদান করেন তিনি।
যুগ্ম আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহ আলম বলেন, বন্দর নগরী বেনাপোল প্রথম শ্রেণির একটি পৌরসভা। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত, বেনাপোল পৌরসভার নাগরিকরা ২০১১ সালে একবার ভোট দিতে পেরেছে। এর পর পৌরসভার ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। বেনাপোল পৌর সভায় বিভিন্নভাবে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাচন করতে দেয়া হচ্ছে না। বেনাপোল পৌরবাসীর সঙ্গে আমিও চাই একটি সুন্দর নির্বাচন হোক।
যুগ্ম আহবায়ক সাংবাদিক মহসিন মিলন বলেন, আদালতে মামলা থাকায় দীর্ঘদিন নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। ভোট না হওয়ায় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতাকর্মীরা হতাশ। দীর্ঘদিন পৌরসভার নির্বাচন না হওয়ায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান পরিষদের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতাও নেই। সর্বশেষ কবে নির্বাচন হয়েছে সেটি ভুলতে বসেছে নাগরিকরা। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক।
প্রধান আহবায়ক মোস্তাক আহমেদ স্বপন বলেন, সম্প্রতি সরকার দেশের যে সমস্ত পৌরসভায় মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে সেসব পৌরসভায় মামলা বর্ধিত করে নতুন করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। অথচ মামলা জটিলতার কারনে বেনাপোল পৌরসভার মেয়াদ শেষ হলেও আজ অবধি নতুন কোন নির্বাচন হচ্ছে না।
সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে মামলা করেন বেনাপোল পৌরসভার মিয়াদ আলী, আজিবর রহমান ও আরও ১০ জনসহ বেনাপোল পোড়াবাড়ি নারানপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান নামে এক ব্যাক্তি তার এলাকার কিছু অংশ পৌরসভার সীমানায় অন্তর্ভুক্তি না করনের জন্য উচ্চ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
প্রায় ৫ বছর ধরে আদালতে ঝুলে আছে সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার ৯টি মামলা। কবে মামলা নিষ্পত্তি হবে সেটি কেউ নিশ্চিত নয়। এতে মামলা পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ভোট না হওয়ায় বর্তমান মেয়র আশরাফুল আলম লিটনকে দোষছেন অনেকেই। তার কলকাঠিতেই মামলার জালে ভোট বন্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
যে সব সংসদীয় এলাকায় মামলা আছে সেসব এলাকায় তো জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। তা হলে বেনাপোলে কেন নির্বাচন হবে না। তিনি আরও বলেন বেনাপোল জনগনের দাবি পৌরসভায় ভোট হোক।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এনামুল হক মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ নাসির উদ্দিন, যশোর জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ অহিদুজ্জামান অহিদ, বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বজলুর রহমান, সীমান্ত প্রেসক্লাব বেনাপোল এর সভাপতি মোঃ সাহিদুল ইসলাম শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব হোসেন পক্ষী, বেনাপোল প্রেসক্লাব ও বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ, বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ সহ আরও অনেকে।